শ্যামলী- 59/1/A, বড়পাড়া, সুনামগঞ্জ পৌরসভা, সুনামগঞ্জ। ০৬:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিনা খরচে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০৪:৩১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • / ৪২ বার পড়া হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিশেষ ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা চালু করেছে বহুজাতিক ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। নতুন এই সেবার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট’, যা সম্পূর্ণ মাশুলবিহীন এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। অর্থাৎ, ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সাররা কোনো প্রকার খরচ ছাড়াই এই হিসাব খুলে ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।

এই অ্যাকাউন্ট খোলার সময় একসঙ্গে দুটি হিসাব চালু হবে—একটি বিদেশি মুদ্রায় এবং অপরটি বাংলাদেশি টাকায়। ফ্রিল্যান্সাররা তাঁদের আয়ের ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রায় এবং বাকি অংশ স্থানীয় মুদ্রায় জমা রাখতে পারবেন। এ ছাড়া, এই হিসাবের সঙ্গে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড ও ব্যক্তিগত ঋণের সুবিধাও থাকছে। ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে দেশ-বিদেশে কেনাকাটা কিংবা এটিএম থেকে নগদ উত্তোলন করা যাবে।

আজ রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান লুৎফুল হাবিব, কান্ট্রি হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং বিটপী দাশ চৌধুরী, বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমানসহ খাতসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিটপী দাশ চৌধুরী জানান, “১২০ বছর ধরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশে নিরবিচারে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবাকে প্রাধান্য দিচ্ছি, আর ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা ও কাজের ধরন অনুযায়ী এই নতুন হিসাব চালু করা হয়েছে।”

ব্যাংকটির আমানত বিভাগের প্রধান নাভিদ হাসান বলেন, “ঘরে বসে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরাই এখন ঘরে বসে ব্যাংক হিসাব খুলে বিদেশি আয় গ্রহণ করতে পারবেন। এমনকি ফরম ‘সি’ পূরণ করাও এখন অনলাইনেই সম্ভব। এই সেবায় কোনো প্রকার মাশুল কাটা হবে না।”

ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং প্রধান লুৎফুল হাবিব বলেন, “স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক ও ডিজিটাল সেবা দিতেই আমরা নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বর্তমানে আমাদের ৭০ শতাংশ গ্রাহক ডিজিটাল মাধ্যমে সেবা নিচ্ছেন এবং গত দুই বছরে শাখায় গ্রাহক আগমন ৪৫ শতাংশ কমেছে।”

তিনি আরও বলেন, “ফ্রিল্যান্সাররা বিদেশ থেকে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা দেশের জন্য নিয়ে আসছেন। ভারতের পরেই বাংলাদেশ এই খাতে সর্বোচ্চ আয় করছে। তাই এই খাতকে উৎসাহিত করতে বিশেষ অ্যাকাউন্ট চালু করা হয়েছে। শুধু সরকারের কর প্রযোজ্য হবে, অন্য কোনো মাশুল প্রযোজ্য নয়।”

অনুষ্ঠানে ডা. তানজিবা রহমান বলেন, “ফ্রিল্যান্সাররা আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কোটি কোটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের সম্মান দেওয়া উচিত। বিদেশ থেকে অর্থ আনতে যে হয়রানির মুখে পড়তে হয়, তা কমাতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের এই উদ্যোগ যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।”

তিনি আরও জানান, বর্তমানে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ দেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত এবং বছরে প্রায় ১০০ কোটি ডলার বৈদেশিক আয় ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে আসছে। তবে ব্যাংকগুলোর পর্যাপ্ত সহযোগিতা না থাকায় আয়ের বড় একটি অংশ ব্যাংকের বাইরে থেকে যাচ্ছে।

ডা. তানজিবা আরও বলেন, “চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীরাও এখন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছেন। ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অনেক চাকরি কেড়ে নেবে, তবে এই প্রযুক্তিকে পরিচালনা করতেই দরকার দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের। তাঁদের যোগ্যতা ও কাজের ধরণ আরও বেশি প্রচার হওয়া উচিত।”

ট্যাগসঃ

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিনা খরচে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ

আপডেট সময়ঃ ০৪:৩১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ছবি: সংগৃহীত

ফ্রিল্যান্সারদের জন্য বিশেষ ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা চালু করেছে বহুজাতিক ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। নতুন এই সেবার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ফ্রিল্যান্সার অ্যাকাউন্ট’, যা সম্পূর্ণ মাশুলবিহীন এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে। অর্থাৎ, ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সাররা কোনো প্রকার খরচ ছাড়াই এই হিসাব খুলে ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।

এই অ্যাকাউন্ট খোলার সময় একসঙ্গে দুটি হিসাব চালু হবে—একটি বিদেশি মুদ্রায় এবং অপরটি বাংলাদেশি টাকায়। ফ্রিল্যান্সাররা তাঁদের আয়ের ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রায় এবং বাকি অংশ স্থানীয় মুদ্রায় জমা রাখতে পারবেন। এ ছাড়া, এই হিসাবের সঙ্গে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড ও ব্যক্তিগত ঋণের সুবিধাও থাকছে। ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে দেশ-বিদেশে কেনাকাটা কিংবা এটিএম থেকে নগদ উত্তোলন করা যাবে।

আজ রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই সেবার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান লুৎফুল হাবিব, কান্ট্রি হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং বিটপী দাশ চৌধুরী, বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমানসহ খাতসংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিটপী দাশ চৌধুরী জানান, “১২০ বছর ধরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশে নিরবিচারে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এখন আমরা ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবাকে প্রাধান্য দিচ্ছি, আর ফ্রিল্যান্সারদের চাহিদা ও কাজের ধরন অনুযায়ী এই নতুন হিসাব চালু করা হয়েছে।”

ব্যাংকটির আমানত বিভাগের প্রধান নাভিদ হাসান বলেন, “ঘরে বসে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরাই এখন ঘরে বসে ব্যাংক হিসাব খুলে বিদেশি আয় গ্রহণ করতে পারবেন। এমনকি ফরম ‘সি’ পূরণ করাও এখন অনলাইনেই সম্ভব। এই সেবায় কোনো প্রকার মাশুল কাটা হবে না।”

ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং প্রধান লুৎফুল হাবিব বলেন, “স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক ও ডিজিটাল সেবা দিতেই আমরা নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বর্তমানে আমাদের ৭০ শতাংশ গ্রাহক ডিজিটাল মাধ্যমে সেবা নিচ্ছেন এবং গত দুই বছরে শাখায় গ্রাহক আগমন ৪৫ শতাংশ কমেছে।”

তিনি আরও বলেন, “ফ্রিল্যান্সাররা বিদেশ থেকে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা দেশের জন্য নিয়ে আসছেন। ভারতের পরেই বাংলাদেশ এই খাতে সর্বোচ্চ আয় করছে। তাই এই খাতকে উৎসাহিত করতে বিশেষ অ্যাকাউন্ট চালু করা হয়েছে। শুধু সরকারের কর প্রযোজ্য হবে, অন্য কোনো মাশুল প্রযোজ্য নয়।”

অনুষ্ঠানে ডা. তানজিবা রহমান বলেন, “ফ্রিল্যান্সাররা আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে কোটি কোটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছেন। তাঁদের সম্মান দেওয়া উচিত। বিদেশ থেকে অর্থ আনতে যে হয়রানির মুখে পড়তে হয়, তা কমাতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের এই উদ্যোগ যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে।”

তিনি আরও জানান, বর্তমানে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ মানুষ দেশে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সঙ্গে যুক্ত এবং বছরে প্রায় ১০০ কোটি ডলার বৈদেশিক আয় ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে আসছে। তবে ব্যাংকগুলোর পর্যাপ্ত সহযোগিতা না থাকায় আয়ের বড় একটি অংশ ব্যাংকের বাইরে থেকে যাচ্ছে।

ডা. তানজিবা আরও বলেন, “চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীরাও এখন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছেন। ভবিষ্যতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অনেক চাকরি কেড়ে নেবে, তবে এই প্রযুক্তিকে পরিচালনা করতেই দরকার দক্ষ ফ্রিল্যান্সারদের। তাঁদের যোগ্যতা ও কাজের ধরণ আরও বেশি প্রচার হওয়া উচিত।”