শ্যামলী- 59/1/A, বড়পাড়া, সুনামগঞ্জ পৌরসভা, সুনামগঞ্জ। ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেতা পেলেন জুলাই যোদ্ধার চেক

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ০১:৪৩:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • / ১ বার পড়া হয়েছে।

সুনামগঞ্জে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে ১ লাখ টাকার চেক পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট জেলা শাখার সহ-সভাপতি আল হেলাল। তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি। জুলাই আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় পট পরিবর্তনের পর চাকরিচ্যুত হন হেলাল। 

শনিবার (১০ মে) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পালের সভাপতিত্বে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও আহত সেজে অনুদানের সরকারি ১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে হেলালের বিরুদ্ধে।

এ খবর জানার পর আহতদের তালিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে জেলায়। শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হয়েছে বলছেন অনেকে। বিস্মিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। যাছাই-বাছাই নিয়ে প্রশ্ন উঠায় একে অপরকে দোষারোপ করছে প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধীরা।

আল হেলাল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতা হিসেবে আওয়ামী লীগের আমলে জামায়াত-বিএনপির কড়া সমালোচক ছিলেন। যে কোনো সভা সমাবেশে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে নিজের লিখা ও সুর করা গান গেয়ে বেড়াতেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর খোলস পালটে হয়ে যান বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাসী। দায়িত্ব পান জাতীয়তাবাদী বাউল দলের যুগ্ম আহ্বায়কের। এই কমিটি নিয়েও সমালোচনা উঠেছিল জেলায়।

এ বিষয়ে জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় সাংবাদিক শহীদ নুর আহমেদ বলেন, সুনামগঞ্জের আন্দোলনে সাংবাদিকরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। কিন্তু যারা আন্দোলনে ছিলেন তারা কেউ তালিকাভুক্ত হওয়ার আশায় আন্দোলন করেননি। নীতি নৈতিকতার জায়গা থেকে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। এখন যারা তালিকাভুক্ত হয়ে চেক নিচ্ছেন তাদের ব্যাপারে কিছু জানা নেই।

এ বিষয়ে আল হেলাল বলেন, আমি কোনো দিন আওয়ামী লীগ করিনি। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের আমাদের কমিটি অনুমোদন হয়নি। আমি বাউল মানুষ তাই গান গেয়েছি। জুলাই আন্দোলনে আমি চোখে ও হাতে আঘাত পেয়েছি।

অন্যদিকে তার সহ-সভাপতি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা শাখার সভাপতি বাউল শাহজাহান মিয়া।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সাকিব বলেন, আল হেলাল নামে কেউ  সুনামগঞ্জের কোথাও আন্দোলনে অংশ নেয়নি। তিনি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সহ-সভাপতি। আমাদের কমিটি হওয়ার আগেই প্রশাসন কিছু মানুষকে তালিকাভুক্ত করে নেয়। সেই সুযোগে হয়তো তালিকায় নাম ঢুকেছে। উনি কীভাবে তালিকাভুক্ত হলেন সেটা তদন্ত করা উচিত। এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন  চেক দেওয়ার পর জানতে পেরেছি উনি বিতর্কিত। এই তালিকা যাচাই-বাছাই করা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে করা সদর উপজেলা কমিটির মাধ্যমে। তারাই বলতে পারবে কীভাবে তালিকায় নাম এসেছে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, আমি একা যাচাই-বাছাই করিনি। আমি সবাইকে চিনিও না। একটা কমিটির মাধ্যমে রেজুলেশন করে তালিকা দেওয়া হয়েছে। যেখানে বৈষম্যবিরোধীসহ অনেক সদস্য ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী কমিটির তারাই ভালো বলতে পারবেন এ বিষয়ে।

সূত্র: ঢাক পোষ্ট

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের নেতা পেলেন জুলাই যোদ্ধার চেক

আপডেট সময়ঃ ০১:৪৩:০৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

সুনামগঞ্জে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে ১ লাখ টাকার চেক পেয়েছেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট জেলা শাখার সহ-সভাপতি আল হেলাল। তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি। জুলাই আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় পট পরিবর্তনের পর চাকরিচ্যুত হন হেলাল। 

শনিবার (১০ মে) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পালের সভাপতিত্বে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নিলেও আহত সেজে অনুদানের সরকারি ১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে হেলালের বিরুদ্ধে।

এ খবর জানার পর আহতদের তালিকা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে জেলায়। শহিদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হয়েছে বলছেন অনেকে। বিস্মিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। যাছাই-বাছাই নিয়ে প্রশ্ন উঠায় একে অপরকে দোষারোপ করছে প্রশাসন ও বৈষম্যবিরোধীরা।

আল হেলাল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের নেতা হিসেবে আওয়ামী লীগের আমলে জামায়াত-বিএনপির কড়া সমালোচক ছিলেন। যে কোনো সভা সমাবেশে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে নিজের লিখা ও সুর করা গান গেয়ে বেড়াতেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর খোলস পালটে হয়ে যান বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে জাতীয়তাবাদের আদর্শে বিশ্বাসী। দায়িত্ব পান জাতীয়তাবাদী বাউল দলের যুগ্ম আহ্বায়কের। এই কমিটি নিয়েও সমালোচনা উঠেছিল জেলায়।

এ বিষয়ে জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় সাংবাদিক শহীদ নুর আহমেদ বলেন, সুনামগঞ্জের আন্দোলনে সাংবাদিকরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। কিন্তু যারা আন্দোলনে ছিলেন তারা কেউ তালিকাভুক্ত হওয়ার আশায় আন্দোলন করেননি। নীতি নৈতিকতার জায়গা থেকে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। এখন যারা তালিকাভুক্ত হয়ে চেক নিচ্ছেন তাদের ব্যাপারে কিছু জানা নেই।

এ বিষয়ে আল হেলাল বলেন, আমি কোনো দিন আওয়ামী লীগ করিনি। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের আমাদের কমিটি অনুমোদন হয়নি। আমি বাউল মানুষ তাই গান গেয়েছি। জুলাই আন্দোলনে আমি চোখে ও হাতে আঘাত পেয়েছি।

অন্যদিকে তার সহ-সভাপতি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা শাখার সভাপতি বাউল শাহজাহান মিয়া।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলার সদস্য সচিব মেহেদী হাসান সাকিব বলেন, আল হেলাল নামে কেউ  সুনামগঞ্জের কোথাও আন্দোলনে অংশ নেয়নি। তিনি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সহ-সভাপতি। আমাদের কমিটি হওয়ার আগেই প্রশাসন কিছু মানুষকে তালিকাভুক্ত করে নেয়। সেই সুযোগে হয়তো তালিকায় নাম ঢুকেছে। উনি কীভাবে তালিকাভুক্ত হলেন সেটা তদন্ত করা উচিত। এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন  চেক দেওয়ার পর জানতে পেরেছি উনি বিতর্কিত। এই তালিকা যাচাই-বাছাই করা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে করা সদর উপজেলা কমিটির মাধ্যমে। তারাই বলতে পারবে কীভাবে তালিকায় নাম এসেছে।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা বলেন, আমি একা যাচাই-বাছাই করিনি। আমি সবাইকে চিনিও না। একটা কমিটির মাধ্যমে রেজুলেশন করে তালিকা দেওয়া হয়েছে। যেখানে বৈষম্যবিরোধীসহ অনেক সদস্য ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী কমিটির তারাই ভালো বলতে পারবেন এ বিষয়ে।

সূত্র: ঢাক পোষ্ট