০৩:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জন্মদিন আজ

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময়ঃ ১১:৩২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে।

শাহ আব্দুল করিম

বাউল শাহ আব্দুল করিমের আজ জন্মদিন, তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় বাউল গান ও গণসংগীতের রচয়িতা। ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধল-আশ্রম গ্রামে তার জন্ম। বাবা ইব্রাহিম আলী ও মা নাইওরজানের ঘরে দারিদ্র্যের মাঝে বড় হওয়া আব্দুল করিম ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীত সাধনা শুরু করেন। তার সঙ্গী ছিল একতারা। জীবনের সাদামাটা যাপনের মধ্যেই তিনি কমর উদ্দিন, সাধক রসিদ উদ্দিন, শাহ ইব্রাহিম মোস্তান বকস-এর কাছ থেকে বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের তালিম নেন।

শাহ আবদুল করিম শারীরিকভাবে আমাদের মাঝে না থাকলেও তার সৃষ্ট গান কোটি কোটি মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে তার মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুর পর তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। করিম বাংলার লোকজ সঙ্গীতের ধারা সহজাতভাবে গ্রহণ করেছেন। ভাটি অঞ্চলের সুখ-দুঃখ, প্রেম-ভালোবাসা, এবং জীবনের অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তার গান কথা বলে। তার অনুপ্রেরণা ছিল ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ, এবং দুদ্দু শাহ-এর দর্শন।

করিম কৃষিকাজ করেও তার গানের সাধনা অব্যাহত রাখেন। তার লেখা ও সুর করা ১৬শ’র বেশি গান সাতটি বইয়ে সংকলিত হয়েছে, যার মধ্যে ১০টি গান বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। যদিও তিনি তরুণ বয়স থেকে গান লিখে আসছিলেন, তার গান মূলত ভাটি অঞ্চলের মানুষদের মাঝেই জনপ্রিয় ছিল। তবে, মৃত্যুর আগে থেকে কয়েকজন শিল্পীর গাওয়া তার গান সারা দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তিনি একুশে পদকও লাভ করেন।

শাকুর মজিদ তাকে নিয়ে “ভাটির পুরুষ” নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেন, যা এখনও জনপ্রিয়। এছাড়াও, তার জীবনভিত্তিক প্রথম উপন্যাস ‘কূলহারা কলঙ্কিনী’ সাইমন জাকারিয়া লিখেছেন।

বাউল আব্দুল করিমের ভক্তরা তার গান গেয়ে, গানের আসর বসিয়ে তাকে স্মরণ করেন। তার গান ও সুরের মাধ্যমেই তিনি আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবেন। তার বিখ্যাত গানগুলোর মধ্যে রয়েছে “বন্দে মায়া লাগাইছে”, “আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম”, “আমি কূলহারা কলঙ্কিনী”, “গাড়ি চলে না” ইত্যাদি। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “গাড়ি চলে না” গানটি সম্পর্কে, “বন্ধুর বাড়ি এ আত্মায়। আত্মশুদ্ধির সন্ধানে ছুটি, কিন্তু পাই না। একদিন হয়তো এই গাড়ি থেমে যাবে, তখন করিমকে মানুষ খুঁজে পাবে শুধু গানে আর সুরে।”

ট্যাগসঃ

নিউজটি শেয়ার করুন

বিস্তারিত লিখুনঃ

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিমের জন্মদিন আজ

আপডেট সময়ঃ ১১:৩২:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

শাহ আব্দুল করিম

বাউল শাহ আব্দুল করিমের আজ জন্মদিন, তিনি অসংখ্য জনপ্রিয় বাউল গান ও গণসংগীতের রচয়িতা। ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার ধল-আশ্রম গ্রামে তার জন্ম। বাবা ইব্রাহিম আলী ও মা নাইওরজানের ঘরে দারিদ্র্যের মাঝে বড় হওয়া আব্দুল করিম ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীত সাধনা শুরু করেন। তার সঙ্গী ছিল একতারা। জীবনের সাদামাটা যাপনের মধ্যেই তিনি কমর উদ্দিন, সাধক রসিদ উদ্দিন, শাহ ইব্রাহিম মোস্তান বকস-এর কাছ থেকে বাউল ও আধ্যাত্মিক গানের তালিম নেন।

শাহ আবদুল করিম শারীরিকভাবে আমাদের মাঝে না থাকলেও তার সৃষ্ট গান কোটি কোটি মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ৯৩ বছর বয়সে তার মৃত্যু ঘটে। মৃত্যুর পর তিনি সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। করিম বাংলার লোকজ সঙ্গীতের ধারা সহজাতভাবে গ্রহণ করেছেন। ভাটি অঞ্চলের সুখ-দুঃখ, প্রেম-ভালোবাসা, এবং জীবনের অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তার গান কথা বলে। তার অনুপ্রেরণা ছিল ফকির লালন শাহ, পুঞ্জু শাহ, এবং দুদ্দু শাহ-এর দর্শন।

করিম কৃষিকাজ করেও তার গানের সাধনা অব্যাহত রাখেন। তার লেখা ও সুর করা ১৬শ’র বেশি গান সাতটি বইয়ে সংকলিত হয়েছে, যার মধ্যে ১০টি গান বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে। যদিও তিনি তরুণ বয়স থেকে গান লিখে আসছিলেন, তার গান মূলত ভাটি অঞ্চলের মানুষদের মাঝেই জনপ্রিয় ছিল। তবে, মৃত্যুর আগে থেকে কয়েকজন শিল্পীর গাওয়া তার গান সারা দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং তিনি একুশে পদকও লাভ করেন।

শাকুর মজিদ তাকে নিয়ে “ভাটির পুরুষ” নামে একটি প্রামাণ্য চিত্র নির্মাণ করেন, যা এখনও জনপ্রিয়। এছাড়াও, তার জীবনভিত্তিক প্রথম উপন্যাস ‘কূলহারা কলঙ্কিনী’ সাইমন জাকারিয়া লিখেছেন।

বাউল আব্দুল করিমের ভক্তরা তার গান গেয়ে, গানের আসর বসিয়ে তাকে স্মরণ করেন। তার গান ও সুরের মাধ্যমেই তিনি আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবেন। তার বিখ্যাত গানগুলোর মধ্যে রয়েছে “বন্দে মায়া লাগাইছে”, “আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম”, “আমি কূলহারা কলঙ্কিনী”, “গাড়ি চলে না” ইত্যাদি। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “গাড়ি চলে না” গানটি সম্পর্কে, “বন্ধুর বাড়ি এ আত্মায়। আত্মশুদ্ধির সন্ধানে ছুটি, কিন্তু পাই না। একদিন হয়তো এই গাড়ি থেমে যাবে, তখন করিমকে মানুষ খুঁজে পাবে শুধু গানে আর সুরে।”