গাজায় শিশুদের অপুষ্টি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে, খাদ্যাভাবে মৃত্যুপ্রায় অনেক পরিবার

- আপডেট সময়ঃ ১১:২৭:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
- / ৩ বার পড়া হয়েছে।
“ডানে থাকা ওয়েদাদ আবদেলআল তার ৯ মাস বয়সী অপুষ্টিতে ভোগা ছেলে খালেদের সঙ্গে এবং তার ৭ বছর বয়সী ছেলে আহমেদ ও ৪ বছর বয়সী মেয়ে মারিয়ার সঙ্গে, যারা দুজনেই অপুষ্টির লক্ষণ দেখাচ্ছে, গাজা উপত্যকার খান ইউনিসের মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের এক শিবিরে নিজেদের তাঁবুর সামনে ২ মে, ২০২৫ তারিখে ছবি তোলেন। (AP)”
মাত্র ৯ মাস বয়সী খালেদ ডায়রিয়া ও দুর্বলতায় ভুগছে। তার ওজন মাত্র ৫ কেজি, যা বয়স অনুযায়ী অর্ধেক। গাজার প্রধান শিশু হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকা খালেদের মা ওয়েদাদ আব্দেলআল অসহায় চোখে সন্তানকে দেখছেন। সীমিত সাপ্লাইয়ে হাসপাতালে তাকে টিউব ফিডিং ও মাঝে মাঝে দুধ দেওয়া হচ্ছে, যা যথেষ্ট নয়। বলছেন তিনি “এই সীমান্ত অবরোধ আমাদের শেষ করে দিচ্ছে,” ।
ইসরায়েলের অবরোধ গাজার জনজীবনকে পঙ্গু করে দিয়েছে। তিন মাস ধরে চলা এই অবরোধে জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী ৮০% মানুষ এখন সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। ইউনিসেফ জানিয়েছে, ৯ হাজারের বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। চিকিৎসা ও পুষ্টি কেন্দ্রগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। খাদ্যগুদাম খালি, বাজারে দাম নাগালের বাইরে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে, “আমরা শিশুদের দেহ ও মন ধ্বংস করছি। যদি আমরা কিছু না করি, তবে এ নিরব হত্যাকাণ্ডে আমরাও দায়ী।”
খালেদের মতো অনেক শিশুই এখন শুধুমাত্র জরুরি অবস্থাতেই হাসপাতালে স্থান পাচ্ছে। এমনকি যেসব শিশু জন্মগত রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য দরকারি ওষুধ ও খাদ্যও নেই। অনেক পিতামাতা নিজের খাবার বাচ্চাদের দিয়ে অপুষ্টিতে ভুগছে।
খালেদের বাবা বলেন, “আমরা এখন শুধু মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছি।” পরিবারের সবাই এখন একটি টিনের কৌটায় রাখা কিছু বিনস দিয়ে দিনের খাবার ভাগ করে খায়। এক কেজি আলু বা টমেটো কিনতে হলে লাগে ২১ ডলার। একটি বিস্কুট ২ ডলার, স্যাডিন ফিশ ১০ ডলার!
বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়লেও, অবরোধ শিথিল করতে ইসরায়েল এখনও রাজি নয়। মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, “ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল।”
সূত্র: আরব নিউজ